
বাংলার আকাশ ডেস্ক :
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ ‘পরিহারযোগ্য মৃত্যুরোধে আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস’ পালন করেছে। এ উপলক্ষ্যে ১৩ মার্চ সকালে প্রশাসনিক ভবন চত্বর থেকে এক র্যা লি বের করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে র্যা লির নেতৃত্ব দেন এবং দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। র্যা লিটি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। র্যা লিতে বিভাগীয় চেয়ারপার্সন ড. ফাতিমা আক্তারসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এডিএন (Avoidable Deaths Network)- বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহযোগিতায় এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান দুর্যোগ মোকাবেলা ও ঝুঁকি হ্রাসে আগাম সতর্কবার্তা প্রাপ্তির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া গেলে অনেকক্ষেত্রেই জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা সম্ভব। দুর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে সারাবছর সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। জনসচেতনতা বাড়াতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে বিভাগীয় মিলনায়তনে ‘দুর্যোগের আগাম সতর্কতা: পরিহারযোগ্য মৃত্যু রোধে আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় চেয়ারপার্সন ড. ফাতিমা আক্তারের সভাপতিত্বে সেমিনারে আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে ডিজাস্টার সায়েন্স এন্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারের ২য় পর্বে আবহাওয়া, জনস্বাস্থ্য, জরুরি প্রতিক্রিয়া এবং দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে আলোচক হিসেবে ছিলেন গৌরবরায়- প্রধান, বাংলাদেশ অফিস, জার্মান রেডক্রস; ডা. ফারিহা হাসিন- সহযোগী অধ্যাপক, জনস্বাস্থ্য ও ইনফরমেটিক্স বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ),ড. আমিনুর রহমান- পরিচালক, ইনজুরি প্রতিরোধ ও গবেষণা কেন্দ্র (CIPRB), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী-এসজিপি, পিএসসি- পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, মো. মোমেনুল ইসলাম, পরিচালক- বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (BMD), শামিম হাসান ভূঁইয়া- বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (BMD)।
গৌরবরায়, প্রধান বলেন, দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্যোগজনিত মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে জনসম্পৃক্ত কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দেন।
ডা. ফারিহা হাসিন ব্যাখ্যা করেন, দুর্যোগের সময় স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী, শিশু এবং বয়স্করা স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিক থেকে বেশি বিপন্ন থাকে। তাদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দরকার।
ড. আমিনুর রহমান, পরিচালক বলেন, তার প্রতিষ্ঠান কীভাবে দুর্যোগের সময় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এবং উপকূলীয় অঞ্চলেএ সব তথ্য কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে কাজ করছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এসজিপি, পিএসসি, সাম্প্রতিক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরেন, বিশেষ করে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ড মোকাবেলায় যথাযথ প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
মো. মোমেনুল ইসলাম ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (BMD) ইম্প্যাক্ট-বেইজড পূর্বাভাস প্রদান করে এবং কীভাবে তারারিয়েল-টাইমডেটার মাধ্যমে দুর্যোগের পূর্বাভাস তৈরিকরে।
শামিম হাসান ভূঁইয়া বলেন, দুর্যোগব্য বস্থাপনায় BMD কীভাবেঅন্যান্য সংস্থাকে সহায়তা করে, কীভাবে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলার সক্ষমতা বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।
সেমিনারে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকগণ অংশ নেন।