, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
আইবিসিএফ টাস্ক কমিটির ৪২তম সভা অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমবায় আন্দোলনের নেতা মোশাররাফ হোসেন শোনালেন গ্রামীণ নারীদের স্বনির্ভরতার গল্প রিফাত চৌধুরীর অসাধারণ সাফল্য: গর্বিত মিশিগান প্রবাসী বাংলাদেশিরা, গর্বিত আলীনগরবাসী বঙ্গবীর ওসমানীকে ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করায় অভিনন্দন ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে  ভান্ডারিয়ায় শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে দেখতে সিএমএইচে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাউদকান্দির আলোর দিশারী মানবসেবা সংগঠনের দুইশো পরিবারের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ সেহলী পারভীনকে মাহে রমজানের প্রার্থনা বার্তা পাঠালেন রোজার কিছু আধুনিক মাসায়ে

নানা হালিমের স্বাদের জাদুতে খুলনা, ইফতারে নানা হালিমের কদর শীর্ষে

নানা হালিমের স্বাদের জাদুতে আছে ভিন্নতা। খুলনা নগরবাসীর ইফতারিতে এ হালিমের কদর সবার শীর্ষে।

শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রথম রমজান রোববার (২ মার্চ) দুপুরের পর থেকেই অনেক রোজাদাররা ভিড় করছেন নানা হালিমের দোকানে।
খুলনা মহানগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনে নানা হালিমের একমাত্র বিক্রয়কেন্দ্র। বিক্রি হয় শুধু রমজান মাসেই। নানা হালিমের গুণগত মান, স্বাদ ও সুগন্ধে মুগ্ধ সবাই। দীর্ঘদিনেও কমেনি চাহিদা, বরং আরও বেড়েছে। নানা হালিম তৈরিতে সোনামুগ ডাল, পোলাও চাল, গম, দেশি ঘি, খাসির মাংস ও নিজস্ব মসলা ব্যবহার করা হয়।

নানা হালিমের মালিকের নাম মো. হজরত আলী (৮১)। ‘নানা’ নামের আড়ালে তার নিজের নাম প্রায় হারিয়েই গেছে। দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে হালিম বিক্রি করছেন তিনি। হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো হজরত আলী নিজ হাতেই রান্না করেন।

মো. হজরত আলী  বলেন, আমি হালিম তৈরি করতে অনেক জিনিস দেই। ভালো খাসি দেই। ডাল, তেল সব আসলটা ব্যবহার করি। বয়সের কারণে আগের মতো পারি না। কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। এবার ব্যবসা তেমন হবে বলে মনে হয় না। তবু রোজাদাররা আমার হালিমের অপেক্ষায় থাকে তাই রান্না করেছি। রমজানের প্রথম দিনেই অনেক মানুষ এসেছে হালিম নিতে। বাজারে জিনিস পত্রের দাম বেশি হলেও গতবার যে দামে বিক্রি করেছি এবারও সে দামে বিক্রি করছি।

তিনি জানান, আধা কেজি হালিম ২০০ টাকা এক কেজি ৪০০ টাকা, দেড় কেজি ৬০০ টাকা আর ২ কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, নানা হালিমে ঝাল ও মশলার পরিমাণ সহনীয় এবং ঘরোয়া পরিবেশে রান্নার মতোই। ইফতারে এ হালিম ছোট-বড় সবাই খেতে পারে।

শাহ নেওয়াজ নামের এক ক্রেতা বলেন, খুলনার ইফতারির একটা ঐতিহ্য নানা হালিম। হালিমের স্বাদে জাদু আছে। না খেয়ে মনে হয় ইফতারের কি যেন নেই। দেরি করে আসলে না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একটু তাড়াতাড়ি এসেছি। তারপরও এত বড় লাইন।

সরকারি চাকরিজীবী এক ক্রেতা বলেন, ২০১৫ সালে খুলনায় বদলি হয়ে আসা থেকে প্রতি বছর নানা হালিম কিনি। আমরা অপেক্ষায় থাকি কখন রমজান আসবে কখন নানা হালিম কিনবো। নানা হালিমের স্বাদ ও মান খুলনার মধ্যে সবচেয়ে সেরা। যার কারণে এখান থেকেই কিনে থাকি।

এদিকে রমজানে নগরীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছোট-বড় অনেক ইফতারের বাজার গড়ে উঠেছে। দুপুরের পর থেকেই ক্রেতারা ইফতারের দোকানে ভিড় করছেন। বিক্রেতারাও ব্যস্ত ইফতার তৈরি, একই সঙ্গে ইফতার সরবরাহে। প্রায় প্রতিটি দোকানেই ইফতার একই রকম। আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, ডিম চপ, শাহী জিলাপি, হালিম, চিংড়ির চপ, পাকোড়া, ছোলা, মুড়ি, সবজি রোল, টিকিয়া, বোরহানি, চিড়া-দই, কলা, আখের রস, মাঠা, চিকেন ফ্রাই এবং এ মৌসুমের তরমুজসহ রকমারি ফল। প্রতিটি দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

সড়কের পাশে নানা পদের ইফতারসামগ্রীর রমরমা বাজার। আর এখানকার ইফতারের স্বাদ নিতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটে আসছেন। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত সবারই ভিড় এখানে

ট্যাগ:

মন্তব্য করুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

আইবিসিএফ টাস্ক কমিটির ৪২তম সভা অনুষ্ঠিত

নানা হালিমের স্বাদের জাদুতে খুলনা, ইফতারে নানা হালিমের কদর শীর্ষে

আপডেট সময়: ১২:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

নানা হালিমের স্বাদের জাদুতে আছে ভিন্নতা। খুলনা নগরবাসীর ইফতারিতে এ হালিমের কদর সবার শীর্ষে।

শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রথম রমজান রোববার (২ মার্চ) দুপুরের পর থেকেই অনেক রোজাদাররা ভিড় করছেন নানা হালিমের দোকানে।
খুলনা মহানগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনে নানা হালিমের একমাত্র বিক্রয়কেন্দ্র। বিক্রি হয় শুধু রমজান মাসেই। নানা হালিমের গুণগত মান, স্বাদ ও সুগন্ধে মুগ্ধ সবাই। দীর্ঘদিনেও কমেনি চাহিদা, বরং আরও বেড়েছে। নানা হালিম তৈরিতে সোনামুগ ডাল, পোলাও চাল, গম, দেশি ঘি, খাসির মাংস ও নিজস্ব মসলা ব্যবহার করা হয়।

নানা হালিমের মালিকের নাম মো. হজরত আলী (৮১)। ‘নানা’ নামের আড়ালে তার নিজের নাম প্রায় হারিয়েই গেছে। দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে হালিম বিক্রি করছেন তিনি। হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো হজরত আলী নিজ হাতেই রান্না করেন।

মো. হজরত আলী  বলেন, আমি হালিম তৈরি করতে অনেক জিনিস দেই। ভালো খাসি দেই। ডাল, তেল সব আসলটা ব্যবহার করি। বয়সের কারণে আগের মতো পারি না। কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। এবার ব্যবসা তেমন হবে বলে মনে হয় না। তবু রোজাদাররা আমার হালিমের অপেক্ষায় থাকে তাই রান্না করেছি। রমজানের প্রথম দিনেই অনেক মানুষ এসেছে হালিম নিতে। বাজারে জিনিস পত্রের দাম বেশি হলেও গতবার যে দামে বিক্রি করেছি এবারও সে দামে বিক্রি করছি।

তিনি জানান, আধা কেজি হালিম ২০০ টাকা এক কেজি ৪০০ টাকা, দেড় কেজি ৬০০ টাকা আর ২ কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, নানা হালিমে ঝাল ও মশলার পরিমাণ সহনীয় এবং ঘরোয়া পরিবেশে রান্নার মতোই। ইফতারে এ হালিম ছোট-বড় সবাই খেতে পারে।

শাহ নেওয়াজ নামের এক ক্রেতা বলেন, খুলনার ইফতারির একটা ঐতিহ্য নানা হালিম। হালিমের স্বাদে জাদু আছে। না খেয়ে মনে হয় ইফতারের কি যেন নেই। দেরি করে আসলে না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একটু তাড়াতাড়ি এসেছি। তারপরও এত বড় লাইন।

সরকারি চাকরিজীবী এক ক্রেতা বলেন, ২০১৫ সালে খুলনায় বদলি হয়ে আসা থেকে প্রতি বছর নানা হালিম কিনি। আমরা অপেক্ষায় থাকি কখন রমজান আসবে কখন নানা হালিম কিনবো। নানা হালিমের স্বাদ ও মান খুলনার মধ্যে সবচেয়ে সেরা। যার কারণে এখান থেকেই কিনে থাকি।

এদিকে রমজানে নগরীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছোট-বড় অনেক ইফতারের বাজার গড়ে উঠেছে। দুপুরের পর থেকেই ক্রেতারা ইফতারের দোকানে ভিড় করছেন। বিক্রেতারাও ব্যস্ত ইফতার তৈরি, একই সঙ্গে ইফতার সরবরাহে। প্রায় প্রতিটি দোকানেই ইফতার একই রকম। আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, ডিম চপ, শাহী জিলাপি, হালিম, চিংড়ির চপ, পাকোড়া, ছোলা, মুড়ি, সবজি রোল, টিকিয়া, বোরহানি, চিড়া-দই, কলা, আখের রস, মাঠা, চিকেন ফ্রাই এবং এ মৌসুমের তরমুজসহ রকমারি ফল। প্রতিটি দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

সড়কের পাশে নানা পদের ইফতারসামগ্রীর রমরমা বাজার। আর এখানকার ইফতারের স্বাদ নিতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটে আসছেন। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত সবারই ভিড় এখানে