
ফেনীর পরশুরামে ১৩ বছরের মেয়ের ছোড়া গরম তেলে দগ্ধ হয়েছেন মো. নূর নবী (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। বর্তমানে দগ্ধ নূর নবী ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি নূর নবীর বাড়িতে গিয়ে নিজেদের পল্লী বিদ্যুতের লোক দাবি করে দরজা খুলতে বলেন হেলমেট পরা দুই যুবক। তখন ভেতর থেকে শিশুরা দরজা খুলে দিলে তারা (দুই যুবক) ঘরের ভেতরে ঢুকে শিশু লামিয়াকে (৭) স্কচটেপ দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যা করে। এ সময় বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহা পালিয়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। গত কয়েকদিন আগে এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী নিহাকে কে বা কারা বাড়ির বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি নিয়ে নিহার কাছে তার বাবা জানতে চাইলে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। সর্বশেষ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তার বাবাকে গরম তেলে ঝলসে দেয় নিহা।
ভুক্তভোগী নূর নবী বলেন, বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় নিহা হঠাৎ এসে আমার মুখ ও শরীরে গরম তেল ছুড়ে মারে। এতে আমার মুখসহ শরীরের একটি অংশ ঝলসে গেছে। এর আগে তার সঙ্গে আমার তেমন কোনো ধরনের রাগারাগিও হয়নি। এ ঘটনার সঙ্গে আমার আরেক মেয়ে লামিয়া হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র থাকতে পারে।
এ ঘটনা তার মেয়ে লামিয়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করছেন স্বজনরাও।
পরশুরাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল হাকিম বলেন, তেল ছুড়ে বাবাকে দগ্ধ করার ঘটনায় অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগের হত্যাকাণ্ডের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শিশু লামিয়া হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে নিহতের মা আয়েশা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কয়েকমাস কারাভোগের পর বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। গত বছরের ১৫ মার্চ এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী লামিয়ার বড় বোন ফাতেমা আক্তার নিহার বর্ণনা অনুযায়ী হত্যাকারীদের ছবি (স্কেচ) এঁকে নিয়েছিল পুলিশ। তবুও পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি।